আফগানিস্তানকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এশিয়া কাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। তানজিদ হাসান তামিম ও সাইফ হাসানের আগ্রাসী শুরু এনে দিলেও পরের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় খুব বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি দল। কিন্তু বোলারদের নৈপুণ্যে সেই রানটিই তাড়া করতে পারেনি আফগানিস্তান। ৮ রানের জয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করলেও নেট রানরেট খুব বেশি বাড়িয়ে নিতে পারেনি লিটন দাসের দল।
মঙ্গলবার আবু ধাবিতে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে তানজিদের ফিফটির সুবাদে ৫ উইকেটে ১৫৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে ১৪৬ রানে থামে আফগানদের ইনিংস। ৪ ওভারে ১১ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন একাদশে ফেরা নাসুম আহমেদ।
এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। ম্যাচটিতে আফগানিস্তান জিতলে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে সুপার ফোরে তাদের যাওয়াই প্রায় নিশ্চিত। যদি না আফগানিস্তান অবিশ্বাস্য ব্যবধানে শ্রীলঙ্কাকে হারায়। তখনই কেবল শ্রীলঙ্কার নেট রানরেট পেরিয়ে সুপার ফোরে উঠবে বাংলাদেশ।
তাই পরের পর্বে যেতে বাংলাদেশের বাস্তব সম্ভাবনা কেবল শ্রীলঙ্কা জিতলেই। দেশটির পানেই তাই তাকিয়ে এদেশের কোটি সমর্থক।
তিন ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করা বাংলাদেশের নেট রানরেট -০.২৭০। তালিকায় তাদের অবস্থান দুই নম্বরে। দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা শ্রীলঙ্কার রানরেট ১.৫৪৬। রানরেটের হিসেবে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ২ পয়েন্ট পাওয়া আফগানিস্তান। তাদের রানরেট ২.১৫০।
ঘরের বাইরে আফগানদের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। আগের পাঁচবারের দেখায় সবকটিতেই হেরেছিল তারা।
বল হাতে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন নাসুম। বাঁহাতি এই স্পিনার প্রথম বলেই এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সেদিকউল্লাহ আতালকে। পরের ওভারেই ইবরাহিম জাদরানকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল দল। কিন্তু তাসকিন আহমেদের বলে পয়েন্টে তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন রিশাদ হোসেন।
তবে জাদরানকে ফেরাতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি দলকে। পঞ্চম ওভারে তাকেও এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন নাসুম। তৃতীয় উইকেটে গুলবাদিন নাইবকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। কিন্তু পরপর দুই ওভারে এই দুই ব্যাটারকে তুলে নিয়ে তা ভেস্তে দেন রিশাদ।
মোহাম্মদ নবীকে তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নিজেদের দিকে আনেন মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু সাইফের করা ১৪তম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমারজাই ২০ রান নিয়ে আফগানদের ম্যাচে ফেরানোর আভাস দেন। তবে এক ওভার পর তাকে তুলে নিয়ে সেই আশা শেষ করে দেন তাসকিন আহমেদ। এরপর রশিদ খান চেষ্টা চালালেও বেশি দূর যেতে পারেননি। ১৯তম ওভারে জোড়া আঘাতে আফগান অধিনায়ককেও ফেরান মুস্তাফিজ। তাসকিনের করা শেষ ওভারে ২ ছক্কা হাঁকিয়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমান নূর আহমেদ।
মুস্তাফিজ নেন ৩ উইকেট, তাসকিন ও রিশাদের শিকার দুটি করে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সাইফ ও তানজিদের কল্যাণে ১১ ইনিংস পর প্রথমবারের মতো উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ রানের দেখা পায় বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারে প্রথমবারের মতো বল হাতে নিয়ে সাইফকে (৩০) বোল্ড করে ৬৩ রানের এই জুটি ভাঙেন রশিদ। নূরের প্রথম বলেই এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে দ্রুত সাজঘরের পথ দেখেন অধিনায়ক লিটন (৯)। এরপর আরও কমতে থাকে রানের গতিও।
২৮ বলে ফিফটি হাঁকানো তানজিদ নূরের ওপর চড়াও হতে গিয়ে ফেরেন ৫২ রান করে। বাঁহাতি এই ওপেনার তার ৩১ বলের ইনিংসটি সাজান ৪ চার ও ৩ ছক্কায়। তার বিদায়ের পর আফগান ঘূর্ণিতে রীতিমত ধুঁকতে শুরু করেন ব্যাটাররা। শামীম হোসেন পাটোয়ারী ফেরেন ১১ রান করে। আসর জুড়ে ধুঁকতে থাকা তাওহিদ হৃদয় ফেরেন ২০ বলে ২৬ রান করে।
পাওয়াপ্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৯ রান তোলা দল পরের ১৪ ওভারের মধ্যে মাত্র দুই ওভারে ১০ বা তার বেশি রান নিতে পেরেছে। জাকের আলী ও নুরুল হাসান সোহান মিলে শেষ ১১ বলে তুলতে পারেন মাত্র ১৫ রান। এর মধ্যে পাঁচ বলে কোনো রানই নিতে পারেননি তারা। চারটি বল লেগ সাইডে মারতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতেই ব্যর্থ হন জাকের।
শেষ ১০ ওভারে দলের খাতায় যোগ হয় ৬৭ রান, উইকেট হারায় ৪টি।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: