সুপার কাপের আগে শিশু হত্যার প্রতিবাদ

১৪ আগস্ট ২০২৫

সুপার কাপের আগে শিশু হত্যার প্রতিবাদ

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক চলমান বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ যেন ফুটে উঠল উয়েফা সুপার লিগে। পিএসজি ও টটনাম হটস্পারের মধ্যকার ম্যাচের আগে শিশু ও বেসামরিক মানুষদের হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যানার প্রদর্শন করেছে উয়েফা।

বুধবার ইতালির উদিনে শহরে অনুষ্ঠিত ম্যাচ শুরুর আগে “শিশু হত্যা বন্ধ কর – বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধ কর লেখা ব্যানার প্রদর্শন করার সময় দুই দলের খেলোয়াড়রা মাঠে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিলেন।

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নেয় গাজার দুই শরণার্থী শিশু। ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, তারা হলেন ১২ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি মেয়ে তালা ও ৯ বছর বয়সী ছেলে মোহাম্মদ। বর্তমানে তারা চিকিৎসার জন্য মিলানে রয়েছেন।

এছাড়া আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া ও ইউক্রেনসহ সংঘাতপূর্ণ এলাকা থেকে ইতালিতে আশ্রয় নেওয়া আরও নয়জন শিশু ম্যাচ শুরুর আগে প্রদর্শনীতে অংশ নেয়।

এর আগে গত শনিবার ফিলিস্তিনের পেলে হিসেবে খ্যাত সুলেইমান আল-ওবাইদের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মধ্যম এক্সে শ্রদ্ধা জানিয়েছিল উয়েফা। কিন্তু সেখানে ফিলিস্তিনি ওই ফুটবলারের মৃত্যুর কারণ উল্লেখ না করায় তাদের সমালোচনা করে লিভারপুলের মিসরীয় ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ লেখেন, “আপনারা কি বলতে পারেন, তিনি কীভাবে, কোথায় এবং কেন মারা গেলেন?”

ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ৪১ বছর বয়সী আল-ওবাইদ গত ৭ আগস্ট গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ সাধারণ নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

মঙ্গলবার উয়েফা ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন ঘোষণা করে, তারা গাজার শিশুদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাড়িয়েছে এবং তিনটি দাতব্য সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।

তবে উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচের আগে, চলাকালীন বা পরে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও ধর্মীয় বার্তা প্রদর্শন নিষিদ্ধ। এই নিয়ম ভাঙলে আর্থিক জরিমানা ও শাস্তির বিধান রয়েছে।

পুরস্কার বিতরণে উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার সেফেরিনের সঙ্গে মঞ্চে ওঠা তালাকে বর্ণনা করা হয়েছে “ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের এক কিশোরী হিসেবে, যাকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা পেতে মিলানে নেওয়া হয়েছে। মঞ্চে তালার সঙ্গে ছিল মোহাম্মদ, যে যুদ্ধের মধ্যে বাবা-মাকে হারিয়েছে এবং এক বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আক্রমণের পর থেকে গাজায় বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন ২৩৫ জন, যার মধ্যে ১০৬ শিশু রয়েছে।

মন্তব্য করুন: