লায়নের ঘূর্ণির সামনে টিকতেই পারল না নিউ জিল্যান্ড

লায়নের ঘূর্ণির সামনে টিকতেই পারল না নিউ জিল্যান্ড

ওয়েলিংটন টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ দিকে নিউ জিল্যান্ডের লড়াই দেখে অনেকেই হয়তো এক যুগের আক্ষেপ ঘুচানোর স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু চতুর্থ দিন সকালেই স্বাগতিক সমর্থকদের সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন এক ন্যাথান লায়ন। ডানহাতি এই অফ-স্পিনারের দুর্দান্ত ঘূর্ণির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি কোনো কিউই ব্যাটার।

রোববার টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে লায়নের ৪ উইকেট শিকারে ১৯৬ রানেই গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। আর ১৭২ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ফলে, ২০১১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৯ ম্যাচ জয়হীন থাকল নিউ জিল্যান্ড।

প্রথম ইনিংসে ক্যামেরন গ্রিন ও জশ হ্যাজেলউডের দশম উইকেটে রেকর্ড জুটিতে ৩৮৩ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে কিউইরা সফরকারী বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। গুটিয়ে যায় কেবল ১৭৯ রানে। ২০৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শুরু করলেও পার্ট-টাইম অফ-স্পিনার গ্লেন ফিলিপসের ক্যারিয়ার সেরা (৫/৪৫) বোলিংয়ে অজিরা অল-আউট হয় ১৬৪ রানে।    

ফলে, অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩৬৯ রানের লক্ষ্যটা ছুঁতে হলে ঘরের মাঠে টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়ার পাশাপাশি নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়ার রেকর্ড গড়তে হতো কিউইদের। ১৯৬৯ সালে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে সর্বোচ্চ ৩৪৫ রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আর রান তাড়ায় কিউইদের সর্বোচ্চ রেকর্ডটি ছিল ৩২৪ রানের, ১৯৯৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে।

তবে রান তাড়ার শুরুতেই প্রথম ইনিংসের মতো আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরার পর এই ইনিংসে কেইন উইলিয়ামসন ফেরেন মাত্র ৯ রানে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ঘরের মাঠে টানা ৫ টেস্ট পর সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেন। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর কোনো বিপদ ছাড়াই ১১১ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেন রাচিন রবীন্দ্র ও ড্যারিল মিচেল।

চতুর্থ দিনের প্রথম ছয় ওভারও কোনো বিপদ ছাড়াই পার করেন এই দুই ব্যাটার। এরপরই কিউই শিবিরে হানা দেন লায়ন। আগের দিন ৫৬ রানে অপরাজিত থাকা রবীন্দ্র এদিন মাত্র ৩ রান যোগ করে লায়নের তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। একই ওভারে টম ব্লান্ডেলকেও তুলে নেন এই অফ-স্পিনার। প্রথম ইনিংসে অজি বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালানো ফিলিপসকে (১) ফেরান পরের ওভারে। 

শেষ পর্যন্ত নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে দুইশ’র আগেই থামে নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট শিকারের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৫ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো ১০ উইকেট নেন লায়ন। একই সঙ্গে ২০০৬ সালের পর প্রথম কোনো স্পিনার হিসেবে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে এক ম্যাচে ১০ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব গড়েন তিনি। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ১৭৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে ম্যাচসেরা হন গ্রিন।

আগামী শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।

মন্তব্য করুন: