টানা তৃতীয় জয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ বাংলাদেশের

টানা তৃতীয় জয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ বাংলাদেশের

দুই ম্যাচ হাতে রেখেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় টি-টুয়েন্টিতে ৯ রানে জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। টানা দ্বিতীয়বার ম্যাচসেরা তাওহীদ হৃদয়। শক্তির বিচারে অনেক পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই জয়ে উচ্ছাসে ভেসে যাওয়ার কিছু নেই। তবে দুশ্চিন্তার জায়গা আছে। সিরিজের শুরু থেকেই বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা ছিল টপ অর্ডারের ব্যাটিং। লিটন-শান্ত-তানজিদ সেটা বাড়িয়েছেন।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রান তাড়ায় নেমে দলীয় ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে মাহমুদউল্লহর তালুবন্দি হন জয়লর্ড গাম্বি (১)। এরপর ব্রায়ান বেনেটকে (৫) কট অ্যান্ড বোল্ড করেন সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া তানজিম সাকিব। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার ক্রেইগ এরভিন (৭)। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা আজও সিঙ্গেল ডিজিটেই আউট হয়েছেন। রিশাদ হোসেনের বলে কিপার জাকেরের গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে করেন ৫ বলে ১ রান।

আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে (৩১) ফেরান মাহমুদউল্লাহ। এই ফরম্যাটে দুই বছর পর উইকেট পেলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ৬৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। এরপর মঞ্চে আসেন তাসকিন। তার বলে লিটন দাসের তালুবন্দি হন ক্লাইভ মাডান্ডে (১১)। এই পর্যায়ে ১০ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ২১ রানের ছোট্ট একটা ঝড় তোলেন জোনাথন ক্যাম্পবেল। তবে দ্রুতই তাকে লিটনের তালুবন্দি করেন তানভীর। এরপর রিশাদের বলে লুকি জঙ্গুয়ের (২) ক্যাচও নেন লিটন। জিম্বাবুয়ের পরাজয় তখন শুধুই সময়ের ব্যাপার।

সেই মুহূর্তে ডানহাতি মিডিয়াম পেসার ফারাজ আকরাম আর ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৯ম উইকেটে গড়েন ৩০ বলে ৫৪ রানের জুটি, যদিও এই জুটি পরাজয়ের ব্যবধান কমানো ছাড়া আর কোনো কাজেই আসেনি। ১৪ বলে ১৩ রান করা মাসাকাদজাকে বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। তবে ১৯ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ৩৪* রান করা আকরামকে থামানো যায়নি। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ২১ রান প্রয়োজন ছিল, জিম্বাবুয়ে তোলে ১১ রান। ২০ ওভারে তাদের স্কোর ৯ উইকেটে ১৫৬। ৯ রানের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সাইফউদ্দিন ৩টি আর রিশাদ দুটি করে উইকেট নেন। বাকি চার বোলার নিয়েছেন ১টি করে।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৬৫ রান তোলে বাংলাদেশ। দলীয় ২২ রানে লিটন দাস দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়ে যান। ১৫ বলে ১২ রান করে ব্লেসিং মুজারাবানিকে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও (৬) যেন লিটনের পথ ধরেন। সিকান্দার রাজার ভেতরে ঢোকা বল তার পায়ের ফাঁক গলে স্টাম্পে আঘাত হানে। পাওয়ারপ্লেতে ওঠে ৪২ রান। আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম আজও বড় স্কোর করতে পারেননি। ২২ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ২১ রান করে তিনি ফারাজ আকরামের বলে ক্যাচ তুলে দেন।

নবম ওভারে ৬০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দারুণ জুটি গড়েন দুই তরুণ জাকের আলী আর তাওহীদ হৃদয়। এই জুটিতেই দলীয় স্কোরের ভিত রচিত হয়। সিরিজে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা হৃদয় আজও খেলেন ৩৮ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৫৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। এটা তার টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। মুজারাবানির বলে হৃদয় বোল্ড হলে ভাঙে ৫৮ বলে ৮৭ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। জাকের ৩৪ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৪৪ রান করে সেই মুজারাবানির বলেই বোল্ড হয়ে যান। ইনিংসের শেষ ওভারে তিন চারে ১৬ রান তোলেন মাহমুদউল্লাহ (৯*) আর রিশাদ হোসেন (৬*)। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৬৫ রান। মাত্র ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মুজারাবানি। একটি করে নিয়েছেন আকরাম এবং রাজা।

মন্তব্য করুন: