করোনার টিকাকে দায়ী করে ফরাসি ফুটবলারের অবসর
২৮ এপ্রিল ২০২৪
২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে থমকে গিয়েছিল পুরো বিশ্ব। মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে তৈরি করা হয়েছিল করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা। ধীরে ধীরে পৃথিবী ফিরে পেয়েছে তার আগের ব্যস্ত রূপ। কিন্তু সম্প্রতি এই টিকাকে দায়ী করে পেশাদার ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের এক খেলোয়াড়।
গত বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ফরাসি দৈনিক লা পারিসিয়া। ফ্রাঁসোয়া-জাভিয়ের ফুমু তামুজো নামের সেই ফুটবলার ফ্রান্সের দ্বিতীয় স্তরের লিগে লাভালের হয়ে খেলতেন। ২০২২ সালে চোটের কারণে মাঠের বাইরে চলে যান ২৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। সেরে ওঠার লড়াইয়ে পেরে না ওঠায় গত ১৮ এপ্রিল অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
করোনার টিকা নেওয়ার সঙ্গে চোটে পড়ার সরাসরি সম্পর্ক আছে বলে জানান তামুজো। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও বায়োএনটেকের ৩ ডোজ টিকা নেন তিনি। প্রথম ডোজ নেন ২০২১ সালের জুলাইয়ে এবং একই বছর আগস্টে নেন দ্বিতীয়টি। এরপর ২০২২ সালের মার্চে নেন সবশেষ ডোজ।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় বলে অভিযোগ করেন তামুজো। বিশেষ করে তার মাংসপেশিতে সমস্যা দেখা দেয় এবং ঘন ঘন চোটে পড়তে থাকেন।
“আমি বুঝতে পারছি না আমার শরীর কাজ করা কেনো বন্ধ করে দিয়েছে। আমি ঠিক মতো হাঁটতেও পারি না। দৌড়ানো তো অসম্ভব হয়ে গেছে। যখনই আমি সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করি সবকিছুই ব্যথা করে।”
সমস্যা আরও বাড়ে যখন তিনি অ্যাকিলিস টেন্ডনের চোটে পড়েন। এরপর অস্ত্রোপচার করে ৮ মাসের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও তাকে যেতে হয়। ২০২২ সালের জুলাইয়ে পুনর্বাসন শেষ হলেও মাঠে নামার জন্য আর ফিট হয়ে উঠতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান নেন তামুজো। আর এ জন্য তিনি দায়ী করেন করোনার টিকা উৎপাদনকারী দুটি প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও বায়োএনটেককে। প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে তিনি মামলাও সিদ্ধান্ত নেন এই ফরোয়ার্ড। একই সঙ্গে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ) ফুটবলারদের জন্য এই টিকা সরবরাহ করায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
এই বিষয়ে তামুজোর আইনজীবী বলেন, “ফুমু তামুজোকে যখন টিকা দেওয়া হয় (জুলাই ২০২১), তখন এটা বাধ্যতামূলক ছিল না। পরে এটা পেশাদার ফুটবলারদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়। আমি মনে করি, তিনি (তামুজো) এ ব্যাপারে বেশ সচেতন ছিলেন। আইন প্রবর্তনের (টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করার) আগেই তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছেন।”
আগামী ২ জুলাই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বিচারিক আদালতে এই মামলার শুনানি হবে। তামুজোর আশা করছেন আদালতের রায় তার পক্ষে আসবে।
মন্তব্য করুন: