হতশ্রী ব্যাটিংয়ে আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারল বাংলাদেশ
১১ অক্টোবর ২০২৫

সিরিজে টিকে থাকার লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে দুইশর আগেই আটকিয়ে রেখেছিলেন বোলাররা। কিন্তু লক্ষ্য তাড়ায় স্বাভাবিক ব্যাটিংয়ের চেয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসাতেই ব্যস্ত ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ৮১ রানে হেরে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ওয়ানডে সিরিজে হাতছাড়া করেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
শনিবার আবু ধাবিতে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তান অলআউট হয় ১৯০ রানে। জবাবে ২১ ওভার ৩ বল আগে ১০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আফগানদের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০১৮ সালে একই ভেন্যুতে দেশটির বিপক্ষে ১১৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা।
লেগ স্পিনে ১৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন রশিদ খান। তবে ব্যাট হাতে ১৪০ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন ইব্রাহিম জাদরান।
ওয়ানডেতে এই নিয়ে টানা চতুর্থ সিরিজ হারল বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ সিরিজ জিতেছিল তারা। এরপর দেশের বাইরে খেলা চার সিরিজের সবকটিতেই হারল তারা, যার শুরুটা হয়েছিল গত নভেম্বরে এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই। সবশেষ ১১ ওয়ানডের মধ্যে জয় এসেছে কেবল একটিতে।
এছাড়াও ২০২৩ সাল থেকে আফগানদের বিপক্ষে খেলা তিনটি ওয়ানডে সিরিজের সবকটিতেই হারল বাংলাদেশ।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ৪০ রানের ভেতর টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ, যার শুরুটা হয় প্রথম ওভারে তানজিদ হাসান তামিমকে (০) দিয়ে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাঁহাতি এই ওপেনারকে ফেরান আজমতউল্লাহ ওমারজাই। এরপর দুই রান নিতে গিয়ে রানআউটে কাটা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত (২)। আগ্রাসী মেজাজে খেলতে থাকা সাইফ হাসান সাজঘরের পথ দেখেন ২৩ বলে ২২ রান করে।
দলীয় ৫০ রানে ওমারজাইয়ের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক মিরাজ (৪)। এরপর জাকের আলীকে নিয়ে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা চালান তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু রশিদকে রীতিমত উইকেট উপহার দিয়ে আসেন তিনি। আফগান স্পিনারের বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২৪ রানে বোল্ড হন ডানহাতি এই ব্যাটার। ২৯ রানের এই জুটি ভেঙে ব্যাটিং অর্ডারের বাকি অংশ ধসিয়ে দেন রশিদ।
জীবন পেলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়া নুরুল হাসান সোহানকেও (১৫) বোল্ড করেন তিনি। পরের বলেই তানজিম হাসান সাকিবকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এই লেগ স্পিনার। সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪৩ বলে ১৮ রান করা জাকের। এরপর শেষ দুই উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো ম্যাচে ৫ উইকেট নেন রশিদ। ১০ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮ ওভার ৩ বলে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
এর আগে স্পিনে শক্তি বাড়াতে এদিন এক পেসার কম নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের বল হাতে শুরুটাও হয় ভালো। রহমানউল্লাহ গুরবাজকে (১১) ফিরিয়ে ১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তানজিম। এরপর সেদিকউল্লাহ আতালকে (৮) তুলে নেন তানভীর ইসলাম।
দলীয় ৬৫ রানে পায়ের চোট নিয়ে রহমত মাঠ ছাড়লে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে শুরু করে আফগানরা। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে (৪) বোল্ড করেন মিরাজ। পরের ওভারে ওমারজাইকে (০) সাজঘরের পথ দেখান একাদশে ফেরা রিশাদ হোসেন।
পঞ্চম উইকেটে জাদরান-মোহাম্মদ নবী দলের হাল ধরার চেষ্টা করলেও বেশি দূর এগুতে পারেননি। নবীকে (২২) ফিরিয়ে ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন তানজিম। রশিদ খানকে (১) ফেরান মিরাজ। জাদরানকে তুলে নিয়ে আফগানদের দুইশর পথ আটকে দেন এই অফ স্পিনার।
রিশাদের করা ৪৫তম ওভারে এএম গাজানফারের (২২) বিদায়ে নবম উইকেটের পতনের পর আবার ব্যাটিংয়ে আসেন রহমত। কিন্তু এক বল খেলেই মাঠ ছাড়তে হয় অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে। এরই সঙ্গে শেষ হয় আফগানদের ইনিংস।
মিরাজ নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পান তানজিম ও রিশাদ।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: