বাজে ব্যাটিং, ফিল্ডিংয়ে হোয়াইটওয়াশডই হলো বাংলাদেশ

৩১ অক্টোবর ২০২৫

বাজে ব্যাটিং, ফিল্ডিংয়ে হোয়াইটওয়াশডই হলো বাংলাদেশ

তানজিদ হাসান তামিমের একার ব্যাটে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ফিল্ডারদের একের পর এক ক্যাচ মিসের মহড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপর তেমন কোনো চাপই তৈরি করতে পারেননি বোলাররা। ৫ উইকেটে হেরে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হয়েছে লিটন দাসের দল।

শুক্রবার চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শেষ বলে ১৫১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ১৯ বল আগে লক্ষ্যে পৌঁছায় ক্যারিবিয়ানরা। ঘরের বাইরে এবারই প্রথম তিন ম্যাচের কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল তারা।

লক্ষ্য তাড়ায় নামা ক্যারিবিয়ানদের চারটি ক্যাচ ছাড়েন ফিল্ডাররা। উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়া আমির জাঙ্গুই জীবন পান দুটি, যার প্রথমটি আসে দ্বিতীয় ওভারে। শরিফুল ইসলামের করা ওভারের প্রথম বলেই স্লিপে ক্যাচ ওঠে। উইকেটের পেছনে থাকা লিটন বল গ্লাভসবন্দি করার জন্য কিছুটা এগুলেও পরে আর চেষ্টা করেননি। ফলে অপ্রস্তুত হয়ে পড়া সাইফ হাসান ক্যাচটি নিতে পারেননি। তখন ১ রানে ছিলেন জাঙ্গু।

পরের ওভারে অ্যালিক অ্যাথানেজকে (১) ফেরান শেখ মাহেদি হাসান। পরের ওভারে আবারও শরিফুলের বলে জীবন পান জাঙ্গু। ১০ রানে থাকা এই ব্যাটারের উড়িয়ে মারা বল তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন বদলি হিসেবে ফিল্ডিংয়ে নামা তাওহিদ হৃদয়।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ব্র্যান্ডন কিংকে (৮) বোল্ড করেন নাসুম আহমেদ। অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়ে ২৩ বলে ৩৪ রান করা জাঙ্গুকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রিশাদ হোসেন। কিন্তু এরপর ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি স্বাগতিকরা। রোস্টন চেইজ ও আকিম অগিস্তের ৯১ রানের জুটিতে জয়ের ভিত পায় ক্যারিবিয়ানরা।

১০ রানে থাকা চেইজের ক্যাচ তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন শরিফুল। ১৩তম ওভারে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন অগিস্ত। রিশাদের করা ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানোর পর ক্যাচ তোলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। কিন্তু কভার অঞ্চলে সহজ ক্যাচটি নিতে পারেননি বদলি ফিল্ডার তানজিম হাসান সাকিব। পরের দুই বলে আরও দুই ছক্কা হাঁকিয়ে সেই ওভারে ২১ রান তোলেন অগিস্ত।

বাঁহাতি এই ব্যাটার তার ফিফটি তুলে নেন ২৪ বলে। ২৮ বলে অর্ধশতকের দেখা পান চেইজ। ১৬তম ওভারে ৫০ রান করা এই দুই ব্যাটারকেই ফেরান রিশাদ। তবে তা আর দলের কাজে লাগেনি।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন তানজিদটস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের হয়ে তানজিদ ছাড়া তেমন সুবিধা করতে পারেননি কেউই। দুটি জীবন পাওয়া এই ওপেনার ছিলেন সেঞ্চুরির পথেও। তবে তার ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৬২ বলের ইনিংসটি থামে ৮৯ রান। এছাড়া দলের হয়ে দুই অঙ্কের দেখা পান কেবল সাইফ। চার নম্বরে নেমে ফেরেন ২২ বলে ২৩ রান করে।

শেষ ৫ ওভারে ৪২ রান তুলতে ৭ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-টুয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করেন রোমারিও শেফার্ড। প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেন জেসন হোল্ডার।

চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে সহজ ক্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা পারভেজ হোসেন ইমনের (৯) বিদায়ে ভাঙে ২২ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৯ বলে ৬ রান করে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক লিটন।

এরপর দলের হাল ধরতে তানজিদকে সহায়তা করেন সাইফ। ৩৬ বলে ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি তুলে নেন তানজিদ। তৃতীয় উইকেটে এই দুই ব্যাটার দলের খাতায় যোগ করেন ৬৩ রান। সাইফকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন হোল্ডার। পাঁচ নম্বরে নেমে ৩ রান করে ফেরেন রিশাদ। পরের ওভারের শেষ বলে নুরুল হাসান সোহানকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের প্রথম উইকেটটি নেন শেফার্ড।

নাসুমও (১) ফেরেন দ্রুত। বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে খেললেও আট নম্বরে নামা জাকের আলী সাজঘরের পথ দেখেন ৩ বলে ৫ রান করে। শেফার্ডের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে মিড-অফে হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দিলে সেঞ্চুরি করতে পারেননি তানজিদ। পরের বলে শরিফুল ইসলামকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন শেফার্ড। ডানহাতি এই পেসারের শিকার ৩ উইকেট।

[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]

মন্তব্য করুন: