মাশরাফি কি এখনই বিসিবি সভাপতি হতে পারবেন?

১১ জানুয়ারি ২০২৪

মাশরাফি কি এখনই বিসিবি সভাপতি হতে পারবেন?

দাবিটা বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে অনেকদিন ধরেই উঠছে। মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ক্রিকেটপ্রেমীদের একটা বড় অংশ বিসিবি সভাপতি হিসেবে দেখতে চায়। বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রীত্ব পাচ্ছেন। যে কারণে তার বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই আবারও লাইমলাইটে চলে এসেছেন মাশরাফি।

বাংলাদেশের ক্রিকেট অধিনায়কদের মাঝে সফলতম মাশরাফির ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। টানা দুইবার নড়াইল-২ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা আকাশছোঁয়া। সহজাত নেতৃত্বগুণ তো আছেই। সেইসঙ্গে আছে সাংগঠনিক দক্ষতা। তাই মাশরাফির বিসিবি সভাপতি হওয়ার বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকার সুযোগই নেই। কিন্তু বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মাশরাফি কি এখনই বিসিবি সভাপতি হতে পারবেন?

এই প্রশ্নের একমাত্র জবাব হচ্ছে- না। এ মুহূর্তে নাজমুল হাসান পাপন যদি বিসিবি প্রধানের পদ ছেড়েও দেন, তাহলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২৫ জন বোর্ড পরিচালকদের মধ্য থেকেই কেউ একজন সভাপতি হতে পারবেন। বাইরের কেউ নয়। তাছাড়া মাশরাফি-সাকিব কেউই এখনো বিসিবির কাউন্সিলর কিংবা  বর্তমান বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্যও নন। কোনো ক্লাবের নেতৃস্থানীয় জায়গাতেও নেই মাশরাফি বা সাকিব। তাই বিসিবির গঠনতন্ত্রের কোনো শর্তই তারা পূরণ করতে পারছেন না। তাহলে মাশরাফিকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হলে কী করতে হবে?

আগে কোনো ক্লাবের হয়ে বিসিবির কাউন্সিলর হতে হবে। তারপর নির্বাচনের মাধ্যমে বোর্ড পরিচালক পদে নির্বাচিত হওয়া হলো দ্বিতীয় ধাপ। এরপর বোর্ড সভাপতি হতে গেলে পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। কারণ বোর্ড সভাপতি ঠিক হয় বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে। কাজেই পাপন বিসিবি প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও গঠনতন্ত্রের কারণে আপাতত মাশরাফি বা সাকিবের ওই পদে বসার সুযোগ নেই। এর ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিষিদ্ধও হতে পারে!

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলোকে অবশ্যই তাদের গঠনতন্ত্র মেনে চলতে হবে। এখন যদি মাশরাফিকে হুট করে সভাপতি বানানো হয়, সেটা যদি বোর্ড পরিচালকদের সম্মতিতেও হয়, তাহলেও আইসিসি এটাকে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করবে। আইসিসি কখনই তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপকে মেনে নেয় না। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকেও তারা নিষেধাজ্ঞা এবং শাস্তি দিয়েছিল। কারণ লঙ্কান বোর্ডে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিল দেশটির সরকার। তাই আপাতত মাশরাফির বোর্ড প্রধান হওয়া হচ্ছে না।

মন্তব্য করুন: