প্রশ্নবিদ্ধ ছিলেন, কিংবদন্তি হয়ে উঠলেন মারক্রাম
১৫ জুন ২০২৫

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং নায়ক এইডেন মারক্রাম তার প্রতিভার প্রতিদান দিতে প্রত্যাশার তুলনায় বেশি সময় নিয়েছেন। তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার ম্যাচজয়ী শতকটিকে দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ইনিংস হিসেবে দেখা হচ্ছে।
৩০ বছর বয়সী মারক্রাম এক দশক আগে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়ে শিরোপা জিতিয়েছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলে তার ক্যারিয়ারে মাঝে মধ্যে প্রতিভার ঝলক দেখা গেলেও ধারাবাহিকতা ছিল না। তবে লর্ডসে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ১৩৬ রানের ইনিংসটি বহু দশকের ব্যর্থতার পর দক্ষিণ আফ্রিককে প্রথম বড় কোনো ক্রিকেট শিরোপা এনে দেয় এবং দেশটির ক্রীড়া ইতিহাসে মারক্রামকে চিরস্থায়ী আসন এনে দেয়।
২২ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেকের ম্যাচেই ৯৭ রানে রানআউট হয়ে শতক হাতছাড়া করেছিলেন মারক্রাম। এরপর থেকে আটটি সেঞ্চুরি ও ১৩টি ফিফটি করেছেন তিনি। তবে তার গড় ৩৬ দশমিক ৫০, যা প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে আসার আগে টানা ১৬ টেস্ট ইনিংসে কোনো সেঞ্চুরি ছিল না মারক্রামের। আর প্রথম ইনিংসে তো রানই করতে পারেননি।
তবে শুক্রবার যখন মারক্রাম আবার ব্যাটিংয়ে নামলেন, তখন তার মধ্যে ছিল আত্মবিশ্বাস আর কর্তৃত্বের ছাপ। বলার মতো কোনো ঝুঁকি না নিয়ে, প্রথম দুই দিনের বোলারদের আধিপত্যের পর কন্ডিশনের পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে খেলে যান।
শনিবার ম্যাচসেরার পুরস্কার নেওয়ার সময় মারক্রাম বলেন, “এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রান আমি জীবনে করিনি। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর এমনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোটা বিস্ময়কর। মাঝখানে সময় কাটাতে হয়, কিছুটা ভাগ্যেরও দরকার পড়ে। খুশি যে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে।”
মারক্রাম জানান, দ্বিতীয় ইনিংসে তার পরিকল্পনা ছিল চাপ সামলে খেলা এবং বাজে বলগুলো থেকে যতটা সম্ভব রান তোলা।
ইনিংসের শুরুতেই অবশ্য আরেক বিপর্যয় সামলাতে হয় তাদের। ম্যাচজয়ী জুটি গড়ার শুরুর দিকে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা হ্যামস্ট্রিংয়ের টানে ভুগতে থাকেন। তবে রান আসা কিছুটা ধীর হয়ে গেলেও বাভুমাকে মাঠে থেকে খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন মারক্রাম।
দলের জয়ে ৬৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা বাভুমা বলেন, “এইডেন অসাধারণ। অনেকে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, কিন্তু ওর মানসিকতা দারুণ। সে নিজের মতো করেই খেলেছে।”
শুক্রবার দিনের শেষ দিকে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে মারক্রামকে আবেগাপ্লুত মনে হচ্ছিল।
“লর্ডস এমন এক জায়গা, যেখানে খেলার স্বপ্ন দেখেন সব টেস্ট ক্রিকেটার। এখানে ফাইনাল খেলতে পারাটা দারুণ এক অনুভূতি। এটি আমার জীবনের অন্যতম বিশেষ একটি দিন।”
মন্তব্য করুন: