শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বাদ পড়ার শঙ্কায় বাংলাদেশ

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বাদ পড়ার শঙ্কায় বাংলাদেশ

শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও জাকের আলী। এরপর কাজটা ছিল বোলারদের দুর্দান্ত কিছু করে দেখানোর। কিন্তু এক ক্যাচ মিসের পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তারা। শ্রীলঙ্কার কাছে ১৫ ওভারের মধ্যে হেরে এশিয়া কাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় পড়েছে লিটন দাসের দল।

শনিবার আবু ধাবিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে পাতুম নিসাঙ্কা ও কামিল মিশারার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩২ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় শ্রীলঙ্কা।

বি গ্রুপ থেকে সুপার ফোরে ওঠার দৌড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে নেট রানরেট। বড় জয়ে ২.৫৯৫ রানরেট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে শ্রীলঙ্কা। -০.৬৫০ রানরেট নিয়ে তিনে আছে বাংলাদেশ। শীর্ষে থাকা আফগানিস্তানের রানরেট ৪.৭০০।

আগামী মঙ্গলবার গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে লিটনের দলকে সেই ম্যাচে শুধু জিতলেই চলবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের ফলের দিকেও। আফগানিস্তান শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দিলে বাদ পড়ে যেতে পারে বাংলাদেশ।

লঙ্কানদের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। উইকেটের পেছনে কুশল মেন্ডিসের (৩) দারুণ ক্যাচ নেন লিটন দাস। শরিফুল ইসলামের করা পঞ্চম ওভারে মিশারাকে ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল দল। কিন্তু মিড-অনে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ক্যাচ তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন শেখ মাহেদি হাসান।

সে সময় ৭ বলে ১ রানে ছিলেন মিশারা। জীবন পেয়ে সেই ওভারে ঝড় তুলে এক ছক্কা ও ২ চারে আরও ১৪ রান নেন তিনি। এরপরই বোলারদের ওপর তাণ্ডব শুরু করেন নিসাঙ্কা ও মিশারা। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুই ব্যাটার ৫২ বলে ৯৫ রান যোগ করে ম্যাচকে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যান।

৩৪ বলে ৫০ রান করা নিসাঙ্কাকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মাহেদি। এরপর কুশল পেরেরাকে (৯) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এই অফস্পিনার। পরের ওভারে মুস্তাফিজের দারুণ এক ক্যাচে দাসুন শানাকাকে (১) শিকারে পরিণত করেন তানজিম হাসান সাকিব। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের কাছাকাছি চলে যায় শ্রীলঙ্কা।

৩২ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৬ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান মিশারা।

জাকের-শামীমের ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শুরুর বিপর্যয় সামাল দেয় বাংলাদেশটসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারে দুটি ফুলটস মিস করে শেষ বলে বোল্ড হন তানজিদ হাসান তামিম। টি-টুয়েন্টিতে নুয়ান তুশারাকে মোকাবেলা করা ৫ ইনিংসের মধ্যে ৩টিতেই তার বলে আউট হলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

পরের ওভারে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমনও। প্রথম ওভারের মতো এই ওভারেও দলের খাতায় কোনো রান যোগ হয়নি। পূর্ণ সদস্য দুটি দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত টি-টুয়েন্টিতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম দুই ওভার মেডেন হওয়ার ঘটনা এটি। এর আগে ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দলের প্রথম রান আসে ১৪তম বলে, ডিপ স্কোয়ার লেগে বল ঠেলে দিয়ে এক রান নেন লিটন। পঞ্চম ওভারে ব্যক্তিগত ৪ রানে জীবন পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়। পরের বলে দৌড়ে তিন রান নিতে গিয়ে মিশারার সরাসরি থ্রোতে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি।

৬ ওভার শেষে দলের খাতায় যোগ হয় ৩ উইকেটে ৩০ রান। এক ওভার পরে ওয়াননিন্দু হাসারাঙ্গার বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন ব্যাটিং অর্ডারে আগে উঠে আসা মাহেদি (৯)।

দশম ওভারে জীবন পান জাকেরও। বল স্টাম্পে লাগলে বাতি জ্বলে ওঠলেও বেল না পড়ায় বেঁচে যান তিনি। এক বল পরেই সাজঘরের পথ দেখেন ২৮ রান করা লিটন। ১০ ওভার শেষে দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫৪ রান।

দুই ওভার পর দুই রান নিতে গিয়ে অসাধারণ এক ডাইভে নিজের উইকেট বাঁচান শামীম। নিয়মিত বাউন্ডারি না এলেও জাকেরর সঙ্গে দৌড়ে রান নিয়ে রানের খাতা সচল রেখে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে তিনি।

জাকের ৩৪ বলে ৪১ এবং শামীম সমান বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৬১ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন তারা। শেষ ৪ ওভারে এই দুই ব্যাটার দলের খাতায় যোগ করেন ৩৯ রান।

[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]

মন্তব্য করুন: