আফগানিস্তান শ্রীলঙ্কাকে হারালেও যেভাবে সুপার ফোরে যেতে পারে বাংলাদেশ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাঁচামরার ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। তবে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে যাওয়াটা আর লিটন দাসের দলের হাতে নেই। এজন্য তাকিয়ে থাকতে হবে শ্রীলঙ্কার দিকে। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে লঙ্কানরা আফগানদের হারাতে পারলেই বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে তাদের সঙ্গী হবে। কিন্তু আফগানিস্তান জিতলে?
খালি চোখে, আফগানিস্তান শেষ ম্যাচে জিতলেই বাংলাদেশ বাদ। কিন্তু কাগজে-কলমে কিন্তু সেটা বলা যাচ্ছে না। অঙ্কের মারপ্যাচে আফগানিস্তান জিতলে যেমন বাংলাদেশ বাদ। আবার তেমনি আফগানিস্তান জিতলেও কিন্তু বাংলাদেশ সুপার ফোরে যেতে পারে! তবে পরের ঘটনাটি ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।
সেই সম্ভাবনা বাড়তো যদি আফগানিস্তানকে ৮ রানে না হারিয়ে আরও বড় ব্যবধানে হারাতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ কেবল জয়ের ন্যূনতম কাজটা করে ভাগ্যটা শ্রীলঙ্কার কাছে এবং অঙ্কের হিসেবে কিছুটা আফগানদের কাছেও সপে দিয়েছে।
তিন ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করা বাংলাদেশের নেট রানরেট -০.২৭০। দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা শ্রীলঙ্কার রানরেট ১.৫৪৬। পয়েন্টে পিছিয়ে থাকলেও রানরেটের (২.১৫০) হিসেবে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ২ পয়েন্ট পাওয়া আফগানিস্তান।
শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জিতলে অবশ্য নেট রানরেটের হিসেবেরই প্রয়োজন হচ্ছে না। পয়েন্টে এগিয়ে থেকেই আফগানিস্তানকে রেখে সুপার ফোরে যাবে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান জিতলে কী হবে সেটাই হিসেব করে দেখার বিষয়। তখনই তিন দলের পয়েন্ট সমান ৪ হওয়ায় আসবে নেট রানরেটের হিসেব। আফগানিস্তান এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে দেখে আগে ব্যাট করে হোক বা পরে ব্যাট করে হোক, নূন্যতম ব্যবধানে জিতলেই বাংলাদেশের আশার গুড়ে বালি। কারণ শ্রীলঙ্কা নেট রানরেটে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকায় অল্প বা মাঝারি ব্যবধানে হারলেও ওদের নেট রানরেট বাংলাদেশের নীচে নামবে না। এখানেই আসছে জটিল হিসেবটা – আফগানরা জিতলেও কীভাবে বাংলাদেশ শেষ চারে যাবে।
আফগানিস্তান যদি এমন ব্যবধানে জিততে পারে যে তাতে শ্রীলঙ্কার নেট রানরেট বাংলাদেশের নীচে নেমে আসে, তাহলেই কেবল বাংলাদেশ সুপার ফোরে যাবে।
কীভাবে? জটিল হিসেবটা কয়েকটা সহজ উদাহরণ দিয়ে দেখে নেওয়া যাক। আফগানিস্তান আগে ব্যাট করে ১৫০ রান তুলে কমপক্ষে ৬৭ রানে জিতলে শ্রীলঙ্কার নেট রানরেট বাংলাদেশের নীচে যাবে। এভাবে ১৮০ করে আফগানদের জিততে হবে কমপক্ষে ৭১ রানে। ২০০ করলে জিততে হবে কমপক্ষে ৭৩ রানে।
যদি শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাট করে? সেটারও উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক। শ্রীলঙ্কা ১৫০ করলে আফগানিস্তান যদি কমপক্ষে ১১ ওভার ২ বলে লক্ষ্যে পৌঁছায়, তাহলেই বাংলাদেশের কপাল খুলবে। একইভাবে শ্রীলঙ্কা ১৮০ করলে বাংলাদেশকে সুপার ফোরে ওঠাতে আফগানিস্তানকে জিততে হবে ১১ ওভার ২ বলের মধ্যে। শ্রীলঙ্কা ২০০ করলে আফগানিস্তানকে জিততে হবে ১১ ওভার ৩ বলে।
যেখানে নূন্যতম জয় পেলেই আফগানিস্তান গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে, সেখানে বাংলাদেশের সমীকরণ মিলিয়ে দিতে রশিদ খানের দল জয়ের চেষ্টা করবে - সেই আশা করাই যায় না।
ঘুরে ফিরে তাই বার বার আসছে নেট রানরেট ভালো না রাখতে পারায় বাংলাদেশের ব্যর্থতার কথা। বাংলাদেশ যদি হংকংকে আরেকটু কম বল খেলে হারাতো; যদি শ্রীলঙ্কাকে এত দ্রুত জিততে না দিত; অথবা আফগানিস্তানের সঙ্গে জয়ের ব্যবধান আরেকটু বাড়াতো, তাহলে সমীকরণগুলো আর অসম্ভব মনে হতো না। পক্ষেই থাকতো অনেক কিছু।
আর হ্যাঁ, বাংলাদেশের পকে যায় এমন আরেকটি সমীকরণও কিন্তু আছে। আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হলে কিন্তু বাংলাদেশই পয়েন্টে এগিয়ে সুপার ফোরে যাবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে।
বাংলাদেশের কোটি-কোটি ক্রিকেট ভক্ত তাই বৃহস্পতিবার ইদানিংকালে টাইগারদের প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠা শ্রীলঙ্কার সমর্থক বনে যাবেন। তা না হলে ঢাকায় বসে হয়তো আবু ধাবিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখবেন আবহাওয়ার অ্যাপসগুলোতে। আর যদি কোনো কারণে তারা প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তানের দুর্দান্ত দাপট দেখেন, তাহলে সমর্থন বদলে সমীকরণ মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার গুঁড়িয়ে যাওয়া দেখতে চাইবেন।
মন্তব্য করুন: