রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার ফোর শুরু বাংলাদেশের
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দাসুন শানাকার তাণ্ডবে বড় সংগ্রহ গড়েছিল শ্রীলঙ্কা। লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো না হলেও সাইফ হাসানের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ফিফটি হাঁকানো এই ওপেনারের বিদায়ের পর হাল ধরলেন তাওহিদ হৃদয়। ডানহাতি এই ব্যাটারের দুর্দান্ত অর্ধশতকে সহজ জয়ের পথেই ছিল দল। কিন্তু শেষ ওভারের নাটকীয়তার পর ১ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটের জয়ে সুপার ফোর পর্ব শুরু করেছে লিটন দাসের দল।
শনিবার দুবাইয়ে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে শানাকার ফিফটিতে ৭ উইকেটে ১৬৮ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫ রান। শানাকার করা ওভারের প্রথম বলে চার মেরে স্কোর সমান করার পর ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন জাকের আলী। এক বল পর কট বিহাইন্ড হন শেখ মাহেদি হাসান। শেষ ২ বলে দরকার ছিল ১ রান। স্ট্রাইকে ছিলেন নতুন ক্রিজে আসা নাসুম আহমেদ। বাঁহাতি এই ব্যাটার ব্যাটে বল ছোঁয়াতেই ওপর প্রান্ত থেকে দৌড়ে দেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। থ্রোতে বল স্টাম্পে না লাগায় জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
জয়ের ভিত গড়ে দেওয়ার মূল কারিগর সাইফ ফেরেন ৬১ রান করে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটিতে তার ৪৫ বলের ইনিংসটি সাজান ৪ ছক্কা ও ২ চারে। ম্যাচসেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। অন্যদিকে ৩৬ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫৮ রানে ফেরেন হৃদয়।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। বাঁহাতি এই ওপেনারকে এবারও বোল্ড করেন নুয়ান তুশারা। লঙ্কান এই পেসারকে মোকাবেলা করা ৬ ইনিংসের ৪টিতেই তার বলে আউট হয়েছেন তানজিদ।
এরপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন সাইফ ও লিটন। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম ৬ ওভারে দলের খাতায় যোগ হয় ৫৯ রান। কিন্তু পাওয়ারপ্লে শেষ হতেই নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন লিটন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে সুইপ করতে গিয়ে স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দেন ২৩ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তৃতীয় উইকেটে সাইফ-হৃদয়ের ৫৪ রানের জুটিতে জয়ের ভিত পায় বাংলাদেশ। ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সাইফ। হাসারাঙ্গাকে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের উপরের কানায় লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
এরপর শামীমকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে থাকেন হৃদয়। ৩১ বলে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। ১৫ ইনিংস পর এই ফরম্যাটে পঞ্চাশের দেখা পান তিনি। এরপর ডানহাতি এই ব্যাটার ছিলেন দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার অবস্থানেও। কিন্তু দুশমন্ত চামিরার করা ১৯তম ওভারে সহজ ফুলটস মিস করে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বোলারদের ওপর আক্রমণ শুরু করেন পাতুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। পঞ্চম ওভারে প্রথমবারের মতো বল হাতে নিয়ে নিসাঙ্কাকে (২২) ফিরিয়ে ৪৪ রানের এই জুটি থামান তাসকিন আহমেদ। এরপরই কমতে শুরু করে রানের গতিও।
সঙ্গীর বিদায়ের পর দ্রুত ফেরেন কুশলও। ৩৪ রান করা এই ব্যাটারকে তুলে নেন মাহেদি। এক ওভার পর কামিল মিশারাকে (৫) বোল্ড করেন এই অফ স্পিনার।
শরিফুল ইসলামের করা ১৪তম ওভারে থার্ড ম্যান অঞ্চলে কুশল পেরেরার ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টাই করেননি মুস্তাফিজুর রহমান। অবশ্য পরের ওভারেই পেরেরাকে (১৬) তুলে নেন তিনি। এরপরই তাণ্ডবের শুরুটা করেন শানাকা। তাকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কাও।
৪০ রানে থাকা শানাকার কিছুটা কঠিন ক্যাচে হাত ছোঁয়ালেও তা তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন শামীম। পরের ওভারে ১৭ রানে থাকা আসালাঙ্কাকে জীবন দেন হৃদয়। শরিফুলের করা সেই ওভারে আসে ১৮ রান।
পরের ওভারে আবারও আসালাঙ্কার ক্যাচ ছাড়েন হৃদয়। তবে তার থ্রো ধরে লঙ্কান অধিনায়ককে রান আউট করেন লিটন। সেই ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে দুই উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। শেষ ওভারে তাসকিনের চারটি ডট বলে সংগ্রহটা আর বাড়াতে পারেনি লঙ্কানরা।
৩৭ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন শানাকা। ২০ রানে মুস্তাফিজের শিকার ৩ উইকেট।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: