ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের কাছে হারল বাংলাদেশ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বোলারদের নৈপুণ্যে উড়ন্ত সূচনা পাওয়া ভারতকে বড় সংগ্রহ গড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। কিন্তু লক্ষ্য তাড়ায় এক সাইফ হাসান ছাড়া প্রতিপক্ষের সামনে সুবিধা করতে পারলেন না আর কেউই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনে ৪১ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
বুধবার দুবাইয়ে ৬ উইকেটে ১৬৮ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। জবাবে ৩ বল আগে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১২৭ রানে।
দলের হয়ে একাই লড়ে যাওয়া সাইফ টানা দ্বিতীয় ফিফটিতে ফেরেন ৫১ রানে। ডানহাতি এই ব্যাটার তার ৫১ বলের ইনিংসটি সাজান ছক্কা ও ৩ চারে। এর মাঝে চারবার জীবন পান তিনি।
সাইফ ছাড়া কেবল পারভেজ হোসেন ইমন দুই অঙ্কের দেখা পান। বাঁহাতি এই ব্যাটার ১৯ বলে ২১ রান করেন।
এই জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে সূর্যকুমার যাদবের দলের। বুধবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের জয়ী দল তাদের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে। ভারতের জয়ে বিদায় নিল সুপার ফোরে টানা দুই ম্যাচ হারা শ্রীলঙ্কা।
লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেধে এই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সাইফ ও ইমন। কিন্তু সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে আসা কুলদীপ যাদবকে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ইমন ফিরলে ভাঙে ৪১ রানের জুটিটি। এরপর কুলদীপ-বরুণ-অক্ষর স্পিনত্রয়ীর ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে শুরু হয় ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল।
আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া তাওহিদ হৃদয় ফেলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ ৭ রান করে। রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। দ্রুত রান নিতে গিয়ে রানআউটে কাটা পড়েন এই ম্যাচের অধিনায়ক জাকের আলী (৪)।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ৩৬ বলে ফিফটি তুলে নেওয়া সাইফ চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু তাকে সহায়তা করতে পারেননি কেউই। যশপ্রীত বুমরাহর ওভারে আউট হওয়ার আগে ব্যক্তিগত ৪০, ৬৫, ৬৬ ও ৬৭ রানে জীবন পান তিনি।
টস জিতে বোলিংয়ে নেমে তানজিম হাসান সাকিব শুরুটা ভালোই করেন। কিন্তু ডানহাতি এই পেসারের দ্বিতীয় ওভারে উইকেটের পেছনে ৭ রানে থাকা অভিষেক শর্মার কিছুটা কঠিন ক্যাচ গ্লাভসবন্দি ব্যর্থ হন জাকের।
পরের তিন ওভারে বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে ৫৫ রান তোলেন অভিষেক ও শুভমান গিল। পাওয়ারপ্লে শেষে দলের খাতায় যোগ হয় ৭২ রান। এরপর বোলিংয়ে এসেই রানের লাগাম টেনে ধরতে শুরু করেন রিশাদ হোসেন। নিজের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে গিলকে (২৯) ফিরিয়ে ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি। এক ওভার পরে তুলে নেন শিভম দুবেকেও (২)।
দ্রুত দুই উইকেট হারালেও আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যান অভিষেক। বাঁহাতি এই ওপেনার তার ফিফটি তুলে নেন ২৫ বলে। রিশাদ ও সাইফ স্পিনে দল রানের লাগাম টেনে ধরলেও একাদশ ওভারে বোলিংয়ে এসে তা আলগা করে দেন সাইফউদ্দিন। এই ওভারে হজম করেন ১৬ রান। এর আগে পাওয়ারপ্লেতে নিজের প্রথম ওভারে দেন ১৭ রান।
পরের ওভারে অভিষেকের আগ্রাসন থামাতে বড় অবদান রাখেন রিশাদ। তার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে রানআউট হয়ে ফেরেন ৩৭ বলে ৭৫ রান করা অভিষেক। এরপর কমে আসে ভারতের রানের গতিও।
সূর্যকুমারকে আউট করে ক্যারিয়ারের ১৫০তম উইকেট নেন মুস্তাফিজ। একই সঙ্গে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিকও বনে যান বাঁহাতি এই পেসার।
তিলক ভার্মাকে (৫) ফিরিয়ে নিজের একমাত্র উইকেটটি নেন দারুণ বোলিং করা তানজিম। শেষ পর্যন্ত হার্দিকের ৩৮ রানের সুবাদে লড়াকু সংগ্রহ পায় ভারত। ইনিংসের শেষ ওভারে তার উইকেট তুলে নেওয়া সাইফউদ্দিন মাত্র ৪ রান দেন।
প্রথম ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৯৬ রান তোলা ভারত বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইনিংসের বাকি অংশে ৪ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে ৭২ রান। তিন ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন রিশাদ।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: