তামিমকে বোর্ড কর্তার দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন মাশরাফির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তামিম ইকবালের বিশ্বকাপ দলে না থাকা নিয়ে আলোচিত ঘটনায় ক্রিকেট বোর্ডের অপেশাদার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সাবেক এই অধিনায়কের মতে বিশ্বকাপে খেলানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অবসর থেকে ফিরিয়ে আনা তামিমকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে না খেলানো বা খেলালে তার ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বোর্ডের কোনো কর্তাব্যক্তির হস্তক্ষেপ করা মোটেও ঠিক হয়নি।
মাশরাফির মতে যে দায়িত্ব কোচ, অধিনায়ক কিংবা টিম ম্যানেজমেন্টের তা কখনোই কোনো বোর্ড কর্মকর্তা করতে পারেন না।
বৃহস্পতিবার রাত আটটায় নিজ ফেইসবুক পেইজে “আমার চোখে এই মুহূর্তে সাকিব-তামিম” শীর্ষক এক ভিডিও বার্তায় মাশরাফি কথা বলেছেন তামিমের বিশ্বকাপ দলে না থাকা নিয়ে। আর এর জন্য তিনি দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাদের।
২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফির মতে, পৃথিবীর কোনো ক্রিকেট বোর্ড বা বোর্ড কর্মকর্তা কখনোই কোনো ক্রিকেটারকে ম্যাচের এতো আগে বলতে পারে না সে কোন পজিশনে খেলবে। এটি বলতে পারে শুধুমাত্র কোচ, অধিনায়ক কিংবা টিম ম্যানেজমেন্ট।
“সেখানে (ভারতে) যেয়ে যদি এমন কিছু হতো যা তামিমের পছন্দ হচ্ছে না বা তামিমের সিদ্ধান্তে টিমের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, সেক্ষেত্রে বোর্ড চাইলেই কিন্তু যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আদর্শ অবস্থায় এমনটাই হয়ে থাকে সারা পৃথিবীতে।”
যে কথা নিয়ে এতো আলোচনা-সমালোচনা তার মূলে রয়েছে তামিমকে বোর্ডের এক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে না খেলা কিংবা খেললেও নিচের দিকে ব্যাট করার প্রস্তাব। সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিশ্বকাপ দলে তাকে রাখার দরকার নেই বলে জানিয়ে দেন তামিম। বিষয়গুলো সামনে আসে বুধবার ফেইসবুকে তামিমের “আমরা চাইনি আপনারা ভুল কিছু জানুন …” শীর্ষক এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে।
এই কারণে তামিমকে বিশ্বকাপ দলে না রাখাটা ভালো হয়নি বলে মনে করেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি। তার মতে ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে ‘ম্যান ম্যানেজমেন্টের’ চরম ঘাটতি রয়েছে। যার ফলে বিশ্বকাপের আগে এরকম এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মাশরাফির জানান, প্রধানমন্ত্রীর চাওয়া ছিল তামিম যেন বিশ্বকাপে খেলে এবং তামিমও সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু এরপরেও তামিম খেলবে কি খেলবে না কিংবা খেললেও কয় নম্বরে খেলবে তা নিয়ে বোর্ড আগে ভাগে কথা বলে ঠিক করেনি।
“যে বিষয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়িয়ে গেল, সে বিষয় নিয়ে তামিমকে আর বিরক্ত করার কোনো দরকার ছিল না যে তামিম কোথায় খেলবে, কয় নম্বরে ব্যাট করবে… যা কিছু হওয়ার তা ভারতে গিয়ে হওয়া উচিত ছিল।”
অধিনায়ক হিসেবেই উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্বটা সাকিব নিতে পারতেন বলে মনে করেন মাশরাফি।
“সাকিব যেহেতু অধিনায়ক হয়ে গিয়েছে, যে ঘটনাগুলো ঘটছে, প্রথম ম্যাচ খেলা বা ব্যাটিং অর্ডার বা যেকোনো আলোচনা – সে ক্ষেত্রে সাকিব নিজেই ব্যক্তিগতভাবে একটা কল করে মেসেজ দিয়ে (তামিমকে) বললে, এই আলোচনার জন্ম হতো না। সেটা নেতিবাচক হলেও দুই জনের মধ্যে থেকে শেষ হয়ে যেত।’
সাকিব ও তামিমের এভাবে মুখোমুখি হয়ে যাওয়াটা ভবিষ্যতের ক্রিকেটারদের জন্য শিক্ষা বলে মনে করেন মাশরাফি।
“সাকিব–তামিম নিয়ে যে কথা হচ্ছে, সেটা তৃতীয় পক্ষের জন্য। তৃতীয় পক্ষ যে আসলেই ক্ষতিকারক, সেটি আবার প্রমাণিত। আশা করি, সামনে এমন কিছু হলে সেটির জন্য এটা একটা শিক্ষা হয়ে থাকল।"
মন্তব্য করুন: