তানভীরের ঘূর্ণি যাদুতে সিরিজে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ
৫ জুলাই ২০২৫

তানজিম হাসান সাকিবের শেষ দিকের ঝড়ো ইনিংসে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে তানভীর ইসলামের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল তারা। কিন্তু জানিত লিয়ানায়েগের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ নিজেদের করে নেওয়ার আভাস দিয়েছিল স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ১৬ রানের জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সমতায় ফিরেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
শনিবার কলম্বোয় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে ২৪৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ৭ বল আগে ২৩২ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
দারুণ এই জয়ের নায়ক ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা তানভীর। ১০ ওভারে ৩৯ রানের খরচায় বাঁহাতি এই স্পিনারের শিকার ৫ উইকেট।
এই জয়ে সাত ম্যাচ পর ওয়ানডেতে জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। সবশেষ জয়টি এসেছিল গত বছর নভেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এছাড়াও ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নিজের ষষ্ঠ ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলেন মিরাজ।
ক্যাচ মিসের মহড়ায় জয়ের ভালো অবস্থান থেকে এক সময় ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয় বাংলাদেশের। পুরো ম্যাচে চারটি ক্যাচ ছাড়ে সফরকারীরা। এর মধ্যে দুবার জীবন পান লিয়ানাগে। ২৮ রানে উইকেটের পেছনে জাকের আলী এবং ৪২ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রিশাদ হোসেন তার ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন।
সুযোগ কাজে লাগিয়ে নবম উইকেটে দুশমন্ত চামিরাকে নিয়ে ৫৮ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ লঙ্কানদের দখলে নেওয়ায় প্রায় সফল হয়ে গিয়েছিলেন লিয়ানাগে। কিন্তু ৭৮ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের সেই আসা গুঁড়িয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ ব্যাটার হিসেবে চামিরাকে বোল্ড করে দলকে জয় এনে দেন তানজিম। তবে তার আগের বলে আসিথা ফার্নান্দোর ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন তিনি।
রান তাড়ার দ্বিতীয় ওভারে পাতুম নিসাঙ্কাকে (৫) তুলে নেন তানজিম। তবে দ্বিতীয় উইকেটে কুশল মেন্ডিস ও নিশান মাদুশকার পাল্টা আক্রমণে দ্রুত রান তুলতে থাকে স্বাগতিকরা। মাদুশকাকে (১৭) তুলে নিয়ে ৪৫ বলে ৬৯ রানের এই জুটি ভেঙে টাইগারদের স্বস্তি এনে দেন তানভীর। নিজের পরের ওভারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা কুশলকেও (৫৬) ফেরান বাঁহাতি এই স্পিনার।
এরপর স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানের চাকা টেনে ধরে বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে আনে সফরকারীরা। মহীশ তিকশানাকে ফিরিয়ে নিজের পঞ্চম শিকার ধরেন তানভীর। তখন স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ১৭০ রান।
এর আগে তৃতীয় ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমকে (৭) হারায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ইমন ও নাজমুল হোসেন শান্তর (১৪) ৬৩ রানের জুটিতে সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে তারা। সঙ্গীর বিদায়ের পর ৪৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন ইমন। ৬৭ রান করা এই ওপেনারকে ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
দ্রুত সাজঘরের পথ দেখেন মিরাজও (৯)। ভালো শুরু পেলেও তা বড় করতে ব্যর্থ হন দুই বছর ওয়ানডে খেলতে নামা শামীম হোসেন পাটোয়ারী (২২)। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা দলের হাল ধরতে ষষ্ঠ উইকেটে জুটি বাঁধেন হৃদয় ও জাকের। কিন্তু ফার্নান্দোর বলে জাকের (২৪) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়লে ভাঙে ৪৫ রানের জুটিটি। এরপরই ধস নামে ব্যাটিং-অর্ডারে।
তানজিমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়ে ফেরেন ৫১ রান করা হৃদয়। দ্রুত ফেরেন হাসান মাহমুদ ও তানভীর ইসলামও। শেষ উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ৩০ রান যোগ করেন তানজিম। মুস্তাফিজ (০) হাসারাঙ্গার শিকার হয়ে ফিরলে ২৫ বল আগে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। তানজিম অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে।
আগামী মঙ্গলবার পাল্লেকেলেতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডে।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: