উইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
২৩ অক্টোবর ২০২৫

সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকারের উড়ন্ত সূচনায় গড়ে দেওয়া ভিতে তিনশর কাছাকাছি সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় স্বাগতিক স্পিনারদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে অল্পতেই গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৭৯ রানের জয়ে দেড় বছর পর ওয়ানডেতে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৯৬ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে ১৯ ওভার ৫ বল আগে ১১৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রানের হিসেবে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়টি ছিল ১৮৩ রানের, ২০২৩ সালের মার্চে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
ঘরের মাঠে গত বছর মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর দেশের বাইরে খেলা টানা চার সিরিজের সবকটিতে হারার পর নিজেদের মনমতো স্লো আর টার্নিং পিচ বানিয়ে সিরিজ জিতল তারা।
অধিনায়ক হিসেবে নিজের চতুর্থ সিরিজে এসে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
লক্ষ্য তাড়ায় নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে ৩৫ রানের ভেতর তিন টপ-অর্ডারকে হারায় ক্যারিবিয়ানরা। এরপর আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক অধিনায়ক শাই হোপকে (৪) তুলে নিয়ে উইকেট শিকারে যোগ দেন তানভীর ইসলাম।
একই ওভারে শারফেইন রাদারফোর্ড (১২) ও রোস্টন চেইজকে (০) তুলে নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের জয়ের আশা শেষ করে দেন রিশাদ হোসেন। কেইসি কার্টিকে (১৫) ফেরান তানভীর। গুদাকেশ মোটিকে (৭) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রিশাদ।
জাস্টিন গ্রিভসকে (১৫) কটবিহাইন্ড করিয়ে নিজের প্রথম শিকার ধরেন মিরাজ। সে সময় বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নেওয়ার। কিন্তু রিশাদের করা পরের ওভারে আকিল হোসেইন ২০ রান নিলে তা আর হয়নি। পরের ওভারের প্রথম বলে ২৭ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটারকে বোল্ড করে ক্যারিবিয়ানদের গুটিয়ে দেন মিরাজ।
প্রথম ওয়ানডের পিচে খেলা হলেও এদিনের শুরুটা একেবারেই আলাদা করেন সাইফ-সৌম্য। দুই ব্যাটারের তাণ্ডবে ৯৩ বলে দলের খাতায় যোগ হয় ১০০ রান। আর এতেই আড়াই বছর পর ওয়ানডেতে শতরানের উদ্বোধনী জুটি পায় বাংলাদেশের। ২০২৩ সালের মার্চে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ১০২ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ও লিটন।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথেও ছিলেন সাইফ ও সৌম্য। কিন্তু রোস্টন চেইজের করা ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৭২ বলে ৮০ রান করা সাইফ বিদায় নিলে ১৭৬ রানের জুটি ভাঙে। এটি দেশের ওয়ানডে ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উদ্বোধনী জুটিটি তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের। ২০২০ সালের মার্চে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৯২ রান করেছিলেন তারা।
আকিলকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন ৮৬ বলে ৯১ রান করা সৌম্য।
এরপর রানের গতিও কমে আসে। ক্রিজে আসার পর থেকেই ধুঁকতে থাকা তাওহিদ হৃদয়ের (২৮) বিদায়ে ভাঙে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে তৃতীয় উইকেটের ৫০ রানের জুটি।
দুটি জীবন পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি শান্ত। অ্যালিক অ্যাথানেজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে বাঁহাতি এই ব্যাটার ফেরেন ৪৪ রান করে। এরপর ৯ রানের ভেতর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (৬), রিশাদ (৩) ও নাসুমকে (১) উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তিনজনকে একই ওভারে ফেরান আকিল।
শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান ও মিরাজ কয়েকবার জীবন পেলেও দলকে তিনশ পার করাতে পারেননি।
পুরো ইনিংসে ক্যারিবিয়ানরা ক্যাচ ছাড়ে ছয়টি। বাংলাদেশ মোট ছক্কা হাঁকায় ১৪, যা ওয়ানডেতে যৌথভাবে তাদের সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেটে সমান সংখ্যক ছক্কা হাঁকিয়েছিল তারা।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]
মন্তব্য করুন: