হারিয়ে যাচ্ছেন ‘অটোচয়েস’ মুস্তাফিজ, জ্বলে উঠছেন তানজিম সাকিব

১৪ মার্চ ২০২৪

হারিয়ে যাচ্ছেন ‘অটোচয়েস’ মুস্তাফিজ, জ্বলে উঠছেন তানজিম সাকিব

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দেখা গেল বাংলাদেশি পেসারদের দাপট। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের স্পোর্টিং উইকেটে বল হাতে ঝলসে উঠলেন তাসকিন, তানজিম, শরীফুলরা। তিনজনই তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন, যার শুরুটা করে দিয়েছিলেন তানজিম সাকিব। শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি যখন বড় হচ্ছিল, ঠিক তখনই তিনটি উইকেট নিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন। মাত্র ২৫৫ রানে থেমে যায় শ্রীলঙ্কা।

গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে অভিষেকেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন তানজিম। ভয়ংকর রোহিত শর্মাকে ফিরিয়েছিলেন শূন্য রানে। এরপর গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বহুল আলোচিত ম্যাচটাও জিতেছিল বাংলাদেশ। ৮০ রানে তানজিম নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবারও তার দুর্দান্ত বোলিং ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিল। ইতিহাসই বলে দিচ্ছে, তানজিম ভালো বোলিং করলে জিতে যায় বাংলাদেশ।

বুধবারের ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তানজিমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মুশফিকুর রহিমও, সাকিব (তানজিম) পুরো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। টার্নিং পয়েন্ট সেটিই। তিনটা উইকেট ভালো সময়ে নিয়েছে। পরে তাসকিন, শরীফুলরাও ভালো করেছে।

জাতীয় দলে নবীন পেসারদের এমন সাফল্য নিঃসন্দেহে দারুণ খবর। একইসঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমানদের মতো সিনিয়রদের জন্য দুঃসংবাদও বটে। একসময়ের দুনিয়া মাতানো কাটার মাস্টার এখন ফুরিয়ে গেছেন। তার ডেলিভারিগুলো ব্যাটারদের কাছে আর ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। এমনকী মিরপুরের মতো বাজে উইকেটেও মুস্তাফিজ আর আগের মতো ঝলসে উঠতে পারেন না। চট্টগ্রামের স্পোর্টিং উইকেটে তো নয়ই। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন। এবার পড়লেন বাদ।

সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচেই মুস্তাফিজ দেদারসে রান বিলিয়েছেন। তিন ম্যাচে তার খরচ যথাক্রমে- ৪২, ৪২ এবং ৪৭ রান। শেষ দুই ম্যাচ মিলিয়ে উইকেট পেয়েছেন মোটে দুইটি। যদিও এখন পর্যন্ত জাতীয় দলে তাকে অটোচয়েস হিসেবে ধরা হয়, তবে নবীন পেসাররা এমন পারফর্ম করে যেতে থাকলে মুস্তাফিজের ক্যারিয়ার স্বাভাবিকভাবেই হুমকির মুখে পড়ে যাবে। দ্রুতই হয়তো তিনি আর জাতীয় দলের কোনো ফরম্যাটেই অটোচয়েস থাকবেন না।

ইংল্যান্ডের পেস কিংবদন্তি জেমস অ্যান্ডারসন সবসময় বলে থাকেন, এই বয়সেও তিনি প্রতিদিন নতুন নতুন স্কিল আয়ত্ত করার চেষ্টা করেন। নিজের অস্ত্রগুলোতে শান দিয়ে থাকেন। তাই একজন পেসার হিসেবে ৪১ বছর বয়সে এসেও টেস্টে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার মতো অসম্ভবকেও সম্ভব করে ফেলেন। কিন্তু ২৮ বছর বয়সী মুস্তাফিজের মাঝে সেই আগ্রহটা দেখতে পান না ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। কাটার মাস্টার থেকে এখন তিনি মোস্ট প্রেডিক্টেবল বোলারে পরিণত হয়েছেন, তবু নিজেকে বদলে ফেলার প্রয়োজন হয়তো মনে করছেন না।

মন্তব্য করুন: