বিশ্বকাপে খেলার মতো এখনও কিছু অর্জন করিনি: ফ্রেজার-ম্যাগার্ক

বিশ্বকাপে খেলার মতো এখনও কিছু অর্জন করিনি: ফ্রেজার-ম্যাগার্ক

আইপিএলে ব্যাট হাতে জেইক ফ্রেজার-ম্যাগার্কের তাণ্ডব দেখার পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন তিনি। কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটারকে ছাড়াই অভিজ্ঞদের নিয়ে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া, যা নিয়ে চলছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। তবে বিষয়টি নিয়ে একদমই ভাবছেন না এই তরুণ ক্রিকেটার। বিস্ফোরক এই ব্যাটারের মতে, অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা পাওয়ার জন্য এখনও যথেষ্ট কিছু অর্জন করতে পারেননি।

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে স্টিভ স্মিথ ফ্রেজার-ম্যাগার্ক জায়গা না পাওয়াটা বেশ চমক হিসেবেই আসে তবে অভিজ্ঞ স্মিথের বাদ পড়াটা এক প্রকার নিশ্চিত থাকলেও ফ্রেজার-ম্যাগার্কের বিষয়টি অনেককেই অবাক করে। এখনও আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি অভিষেক না হলেও ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটার বিগ ব্যাশ আইপিএলে যা করেছেন, তাতে বিশ্বকাপে দলে তার জায়গা নিয়ে অনেকে নিশ্চিত ধরে নেন।

গত বছর অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ৫০ ওভারের টুর্নামেন্ট মার্শ কাপে ২৯ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে আলোচনায় আসেন ফ্রেজার-ম্যাগার্ক, যা স্বীকৃত ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। এরপর বিগ ব্যাশে তিনি ১৫৮ দশমিক ৬৪ স্ট্রাইক-রেটে রান করেন ২৫৭। ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। সেখানেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন তিনি। আর এবারের আইপিএলে তো রীতিমত তাণ্ডব চালাচ্ছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

বদলি হিসেবে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে সুযোগ পেয়ে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচে ফ্রেজার-ম্যাগার্ক ১৫ বলে ফিফটি করেছেন। আসরে ছয় ইনিংস খেলে তিন ফিফটিতে ২৩৩ দশমিক ৩৩ স্ট্রাইক-রেটে তার রান ২৫৯। একটিতে খেলেছেন ২৭ বলে ৮৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।

তবে আইপিএলের চেয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট যে অনেক আলাদা সেটিও জানেন ফ্রেজার-ম্যাগার্ক। তিনি। তাই দলে জায়গা না পাওয়ার আক্ষেপ বা হতাশা তার নেই। তার অস্ট্রেলিয়ার মতো দলে হুট করে জায়গা আদায় করা যে কতটা কঠিন, সেটিও তিনি ভালোভাবে বোঝেন।

উইলো টক নামক এক পডকাস্টে বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়ার বিষয়ে ২২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার বলেন, “আমার সঙ্গে যোগাযোগটা ছিল খুবই ভালো স্বচ্ছ। (দলে না থাকার) ব্যাপারটি দুই দিক থেকে দেখতে পারি। প্রথমত ভাবতে পারি যে, ‘দলে থাকার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এসব কিছু আমি করেছিআবার এটাও ভাবতে পারি যে, ‘মাস দেড়েক আগে তো আমি দৃশ্যপটেই ছিলাম না!’ তারা সম্ভবত মাস দেড়েক আগেই স্কোয়াডের একটি সম্ভাব্য ছবি এঁকে ফেলেছিলেন।

তবে অস্ট্রেলিয়ার তারকায় ঠাসা বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইন-আপে তাকিয়ে নিজের জন্য ফাঁকা জায়গা দেখেন না ফ্রেজার-ম্যাগার্ক নিজেও। সব ঠিক থাকলে ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন জানিয়ে বলেন, এটাও বুঝতে হবে যে, দলে জায়গা বের করা কঠিন। ডেভিড ওয়ার্নার আছেন সেখানে, তিন সংস্করণ মিলিয়ে আমাদের সর্বকালের সেরা ওপেনার। ট্র্যাভিস হেড আছেন, এখানে (আইপিএলে) তিনি জ্বলে উঠেছেন এবং গত দেড় বছর ধরেই দারুণ উজ্জ্বল। এরপর আছেন মিচ মার্শ, তিনিও একইরকম এবং দলের অধিনায়কও।

পাঁচ বা ছয় নম্বরেও নিজেকে ব্যাটিংয়ে দেখছি না আমি, কারণ টিম ডেভিড, ক্যামেরন গ্রিন এবং এই ধরনের ব্যাটার দিয়ে জায়গাটি মোটামুটি থিতু। সুযোগ না পাওয়ার ব্যাপারটি তাই এভাবেই দেখি। কোনো সমস্যা নেই। আশা করি, আরও অনেক সময় পড়ে আছে সামনে।

বিশ্বকাপে দলে জায়গা না পেলেও এখনই অবশ্য শেষ হয়ে যায়নি ফ্রেজার-ম্যাগার্কের। রিজার্ভ হিসেবে কয়েকজনকে দলের সঙ্গে নিতে পারে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে নিজের নাম আশা করছেন তিনি।

সফরসঙ্গী রিজার্ভ হিসেবে যদি একটি জায়গা পেয়ে যাই, তাহলে দারুণ হবে। ওখানে গিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারব। এটা আমাকে খুব একটা ভাবায়নি, কারণ আমি এখনও এমন কিছু করিনি যে মনে হতে পারে, দলে জায়গা অর্জন করে নিতে পারি। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চেয়ে বিশ্বকাপ অনেক বেশি আলাদা।

মন্তব্য করুন: