নাটকীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ বাংলাদেশের

২২ জুলাই ২০২৫

নাটকীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ বাংলাদেশের

শুরুর বিপর্যয় সামলে জাকের আলীর ফিফটিতে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। রান তাড়ায় নামা পাকিস্তান শুরুতে পড়লো আরও বড় বিপর্যয়ে। শরিফুল-তানজিমদের বোলিং নৈপুণ্যে হারই দেখছিল তারা। কিন্তু একাই লড়ে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেলেন ফাহিম আশরাফ। তবে শেষ পর্যন্ত ৮ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টুয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লিটন দাসের দল।

মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জাকেরের ৫৫ রানের সুবাদে ১৩৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ৪ বল আগে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। টি-টুয়েন্টিতে কোনো সিরিজে এবারই প্রথম পাকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ।

শুরুর বিপর্যয়ের পর ফাহিমের ব্যাটে ভর করে শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ২৮ রান, হাতে ছিল ২ উইকেট। রিশাদ হোসেনের করা ১৯তম ওভারে আহমেদ দানিয়েলকে নিয়ে প্রথম ৫ বলে ১৫ রান তুলে ফেলেন তিনি। শেষ বলে বাঁহাতি এই ব্যাটারকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন রিশাদ।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৩ রান।মুস্তাফিজুর রহমানের করা প্রথম বলে চার মেরে জয়ের সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখেন দানিয়েল। তবে পরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে শামীম হোসেনের হাতে তিনি ক্যাচ দিলে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।

এর আগে পাওয়ারপ্লেতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল পাকিস্তান, যার শুরুটা হয় প্রথম ওভারেই। ফখর জামানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়েন সাইম আইয়ুব (১)। শেখ মাহেদী হাসানের করা ওভারের শেষ বলে দারুণ এক ডাইভ দিয়ে বাউন্ডারি আটকান পারভেজ হোসেন ইমন। সেখান থেকে বল তুলে নিয়ে উইকেটকিপারের হাতে দিলে লিটন স্টাম্প ভাঙেন।

পরের ওভারে মোহাম্মদ হারিসকে (০) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন শরিফুল ইসলাম। নিজের পরের ওভারে ফখরকেও (৮) তুলে নেন বাঁহাতি এই পেসার। পরের ওভারে জোড়া আঘাত হেনে রানের খাতা খোলার আগেই হাসান নাওয়াজ ও মোহাম্মদ নাওয়াজকে কট বিহাইন্ড করান তানজিম হাসান সাকিব।

১৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর খুশদিল শাহকে নিয়ে দলের বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক সালমান আলী আগা। কিন্তু বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দ্রুত রান তুলতে পারেননি কেউই। ২৩ বলে ৯ রান করা সালমানকে তুলে নিয়ে ১৫ রানের এই জুটি থামান মাহেদী। খুশদিলকে (১৩) এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এই অফ-স্পিনার।

অষ্টম উইকেটে ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদির আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নাটকীয় কিছুর আভাস দেয় পাকিস্তান। কিন্তু আব্বাসের (১৯) স্টাম্প ভেঙে ৪১ রানের সেই জুটি থামান শরীফুল। এরপর দানিয়েলের সঙ্গে নবম উইকেটে ১৭ বলে ৩৩ রানের জুটি গড়েন ফাহিম। তার ৩২ বলের ইনিংসটি থামে ৫১ রানে।

শরিফুলের শিকার ৩ উইকেট, মাহেদী ও তানজিম নিয়েছেন ২টি করে।

৪৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন জাকেরটস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটাও ভালো হয়নি। পাওয়ারপ্লেতেই তারা হারায় নাঈম শেখ (৩), লিটন (৮), তাওহিদ হৃদয় (০) ও আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো ইমনের (১৩) উইকেট। ২৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর মাহেদীকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন জাকের। পঞ্চম উইকেটে এই দুই ব্যাটার যোগ করেন ৪৯ বলে ৫৩ রান। ২৫ বলে ৩৩ রান করা মাহেদী ফিরলে এই জুটি থামে।

এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখতে থাকেন জাকের। শেষ ওভারের পুরোটা সময় স্ট্রাইক নিজের কাছে রেখে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন তিনি। শেষ বলে ৪৮ বলে ৫ ছক্কা ও ১ চারে ৫৫ রান করে আউট হন ডানহাতি এই ব্যাটার।

ইনিংসে ৬১ বলে কোনো রান নিতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে ৪৭ রান তুলতে ৫ উইকেট হারায় দল।

আগামী বৃহস্পতিবার একই ভেন্যুতে সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে দুদল।

[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে।]

মন্তব্য করুন: