রোনালদোর সৌদি-চুক্তির নেপথ্যে কে?

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

রোনালদোর সৌদি-চুক্তির নেপথ্যে কে?

অনেকদিন বিশ্বের শীর্ষধনী ছিলেন বিল গেটস। মাইক্রোসফটের এই সহ-প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে একটা গল্প শোনা যায়। তাঁর হাত থেকে যদি এক ডলার মাটিতে পড়ে, সেটি তুলতে তুলতেই তাঁর অ্যাকাউন্টে কয়েক ডলার জমা হয়ে যায়! ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ক্ষেত্রেও তো একই কথা বলা যায়। সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরের সঙ্গে বিশাল অঙ্কের চুক্তি করার পর অবস্থাটা এমন- প্রতি সেকেন্ডেই রোনালদোর আয় কয়েক ডলার। এই টাকার মেশিনের নেপথ্যে রিকার্দো রেজুফে; রোনালদোর রাইট-হ্যান্ড ম্যান। কে এই রিকার্দো রেজুফে?

ইউরোপিয়ান ফুটবলের উত্তাপ ছেড়ে টাকায় ঝাঁপ দিয়েছেন রোনালদো। সৌদি ক্লাবে বছরে আয় করবেন ২০০ মিলিয়ন ইউরো। অতীতে তিনি যতবার দল বদলেছেন, মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন সুপার এজেন্ট জোর্জে মেন্দেস। তবে এবারের বিশাল অঙ্কের অর্থ চুক্তির কোথাও নেই এই লোকটি। টাকার এই পাহাড়ে চলার নেপথ্যে আছেন রোনালদোর ব্যক্তিগত ম্যানেজার ও বন্ধু রেজুফে। আল-নাসেরের সঙ্গে চুক্তির বিষয়াদির আলোচনা যে তাঁর মাধ্যমেই হয়েছে।

সৌদি ক্লাব আল-নাসরের জার্সিতে রোনালদো।  ছবি: সংগৃহীতরোনালদোর বয়স যখন ১৬, তখন থেকেই রেজুফে আছেন তাঁর সঙ্গে। শুরুটা হয়েছিল ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নাইকির মাধ্যমে। এই শতাব্দীর শুরুতে নাইকির প্রতিনিধি হিসেবে রোনালদোর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন রেজুফে। লম্বা সময় নাইকির মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়নের পর এখন রোনালদোর এনডোর্সমেন্ট ও ম্যানেজারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

এতদিন রোনালদোর ক্লাব ও চুক্তিবিষয়ক সবকিছু দেখভাল করতেন মেন্দেস। তাহলে সৌদি ক্লাবের সঙ্গে এত বড় চুক্তিতে তিনি নেই কেন? কারণটা রোনালদোর ওই বিতর্কিত সাক্ষাৎকার। ইংলিশ মিডিয়া ব্যক্তিত্ব পিয়ার্স মরগানের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বিরোধিতা করেছিলেন মেন্দেস, যে কারণে সম্পর্কের অবনতি তাঁদের। রেজুফেও বিরুদ্ধ অবস্থানে ছিলেন, তবে কিছুদিনের মধ্যে আবার একহয়ে গিয়ে নেমে পড়েন আল-নাসেরের সঙ্গে চুক্তির আলোচনায়।

ব্যক্তিগত ম্যানেজার ও বন্ধু রিকার্দো রেজুফের সঙ্গে রোনালদো।  ছবি: সংগৃহীতরোনালদোর সঙ্গে রেজুফের ব্যক্তিগত সম্পর্কটা যেমন বন্ধুত্বপূর্ণ, তেমনি পারিবারিক বন্ধনও মধুর। রেজুফের পরিবারের সঙ্গে রোনালদোর ঘুরতে যাওয়া বা রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার ছবি অনেকবারই এসেছে সংবাদমাধ্যমে। মাঠেও তাঁদের একসঙ্গে দেখা গেছে অনেকবার। যার মধ্যে ২০১৬ সালের ইউরো ফাইনাল চোখে লেগে থাকার কথা। ফ্রান্সকে হারিয়ে পর্তুগালের শিরোপা জেতার পর রোনালদো প্রথম উদযাপন করেছিলেন ৪৩ বছর বয়সী এই রেজুফের সঙ্গেই।

আর সব বাদ দিন, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত রোনালদো নিয়েছেন রেজুফের কাঁধে ভর দিয়েই। ইউরোপিয়ান ফুটবলের উত্তাপ ছেড়ে সৌদি আবরের উন্নয়নশীল ফুটবলে ঝাঁপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত, মোটেও সহজ হওয়ার কথা নয়।

হ্যাঁ টাকাই হয়তো এখানে মুখ্য, তারপরও খেলোয়াড়টি তো রোনালদো! চিন্তা করুন রেজুফের ওপর রোনালদোর আস্থা কতটা। এমনি তো আর তাঁকে বলা হচ্ছে না ‘রোনালদোর রাইট-হ্যান্ড’!

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Add