ইংল্যান্ডের ২০ ওভারে ৩০৪ রানে রেকর্ড বইয়ে তোলপাড়
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে প্রথম ওভারে ১৮ রান নিয়ে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন জস বাটলার ও ফিল সল্ট। এরপর তা রূপ নিল তাণ্ডবে। একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে রেকর্ড বইয়ের পাতা ওলটপালট করে দিয়েছে ইংল্যান্ড। দুটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে হওয়া টি-টুয়েন্টি ম্যাচে প্রথমবারের মতো দেখা মিলেছে তিনশ রানের ইনিংস। এছাড়াও এই ফরম্যাটে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় পেয়েছে ইংলিশরা।
শুক্রবার ম্যানচেস্টারের টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সল্টের সেঞ্চুরিতে ২ উইকেটে ৩০৪ রান তোলে ইংল্যান্ড। টি-টুয়েন্টিতে এটি তাদের সর্বোচ্চ এবং সব মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। টেস্ট খেলুড়ে দুটি দেশের মধ্যে আগের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল ভারতের। গত বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে হায়দরাবাদে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান করেছিল তারা।
অন্যদিকে সব দলের মধ্যে হওয়া আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটি জিম্বাবুয়ের। গত বছর গাম্বিয়ার বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৪৪ রান করেছিল দেশটি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নেপাল ২০২৩ সালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৩১৪ রান করেছিল।
সল্টের রেকর্ড ইনিংস
ইংল্যান্ডকে রান পাহাড়ে তুলতে বড় ভূমিকা রাখেন সল্ট। ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ডানহাতি এই ওপেনার গড়েন ইংল্যান্ডের হয়ে ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের রেকর্ড। ছাড়িয়ে যান ২০২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের করা ১১৯ রানের ইনিংসটি।
রেকর্ড গড়া ইনিংস খেলার পথে ইংল্যান্ডের হয়ে ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিকও বনে যান সল্ট। ৩৯ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করে ভেঙে দেন লিয়াম লিভিংস্টোনের ৪২ বলের সেঞ্চুরির রেকর্ডটি। শেষ পর্যন্ত সল্ট তার ৬০ বলের ইনিংসটি সাজান ১৫ চার ও ৮ ছক্কায়।
বাউন্ডারির ঝড়
এদিন বাউন্ডারিতেই ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা তুলেছে ২২৮ রান, যা ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ। গত বছর গাম্বিয়ার বিপক্ষে চার-ছক্কায় সর্বোচ্চ ২৮২ রান তুলেছিল জিম্বাবুয়ে। একই বছর হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিপক্ষে বাউন্ডারি থেকে ২৩২ রান নিয়েছিল ভারত।
প্রোটিয়াদের ওপর ঝড় তুলে ৩০টি চার মারে ইংলিশরা, যা এই ফরম্যাটে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। এর সঙ্গে ছক্কা হাঁকায় ১৮টি। সব মিলিয়ে স্বাগতিকরা বাউন্ডারি মারে মোট ৪৮টি, যা ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গাম্বিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৫৭টি (৩০ চার ও ২৭ ছক্কা) বাউন্ডারি মেরেছিল।
রানের ব্যবধানে রেকর্ড জয়
লক্ষ্য তাড়ায় ১৬ ওভার ১ বলে ১৫৮ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ড ম্যাচ জেতে ১৪৬ রানের ব্যবধানে, যা ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এটি রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় পরাজয়।
আইসিসির পূর্ণ সদস্য দুটি দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত ম্যাচে এটি রানের হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। ২০২৩ সালে নিউ জিল্যান্ডকে ১৬৮ রানে হারিয়েছিল ভারত। চলতি বছর শুরুতে ইংল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারিয়েছিল তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দুঃস্বপ্নের দিন
ইংল্যান্ড ব্যাটারদের তাণ্ডবে ভুলে যাওয়ার মতো একটি দিন পার করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। ছেলেদের টি-টুয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো ইনিংসে তিনজন বোলার ৬০ বা এর বেশি রান দিয়েছেন।
৪ ওভারে ৭০ রান দেন কাগিসো রাবাদা, যা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল কাইল অ্যাবটের ৬৮ রানের।
এদিন প্রথম ওভারে মাত্র ৭ রান দেন রাবাদা। কিন্তু পরের তিন ওভারে তিনি যথাক্রমে ২০, ২৩ ও ২০ রান দেন। ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে তিনটি ভিন্ন ওভারে ২০ বা তার বেশি রান দেওয়া প্রথম বোলার এই ডানহাতি পেসার।
এছাড়া মার্কো ইয়েনসেন ৬০ ও লিজাড উইলিয়ামস ৬২ রান করে দেন। এদের মধ্যে ২ ওভার ১ বলে ৫০ রান দেন উইলিয়ামস, যা টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বোলারদের মধ্যে দ্রুততম ৫০ রান দেওয়ার রেকর্ড।
মন্তব্য করুন: