‘পাকিস্তান নিজেদের পায়ে নিজেরাই গুলি করেছে’

১৩ জানুয়ারি ২০২৪

‘পাকিস্তান নিজেদের পায়ে নিজেরাই গুলি করেছে’

পাকিস্তান রাষ্ট্রটির মতোই তাদের ক্রিকেটাঙ্গন কোনোকালেও স্থিতিশীল ছিল না। একের পর এক বিতর্ক সেখানে লেগেই থাকে। রাতারাতি হাতবদল হয় ক্ষমতা। যেমন গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরই তাদের পুরো কোচিং স্টাফ বদলে ফেলা হয়েছিল। নির্বাচক ইনজামাম-উল-হক পদত্যাগ করেন। বিশ্বকাপে মুখ থুবড়ে পড়া দলটির অবস্থা এখন খুবই করুণ। এসব নিয়ে এবার মুখ খুললেন পাকিস্তানের সাবেক কোচ মিকি আর্থার।

২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধান কোচ ছিলেন আর্থার। তার অধীনেই ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল পাকিস্তান। অথচ ২০১৯ বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর পিসিবি তাকে ছাঁটাই করে। এরপর গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠির অনুরোধে পরিচালক পদে আবারও পাকিস্তান দলে যোগ দেন আর্থার। কিন্তু ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের পারফর্মেন্স ছিল খুবই করুণ।

এক সাক্ষাৎকারে আর্থার বলেছেন, আমি প্রতিনিয়ত দেখছি, পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়ে পেরেক মারছে। প্রতিভা আছে, প্রয়োজন সঠিক কাঠামো, ভালো নেতৃত্ব। সঙ্গে চাই ধারাবাহিকতা ও স্থায়ীত্ব। নাজামকে (নাজাম শেঠি) ধন্যবাদ, ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আমাদের কাছে এমন খেলোয়াড় ছিল, যারা প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করত। আমি যখন ইনজির (ইনজামাম-উল-হক) সঙ্গে বসতাম, যার সঙ্গে আমার কাজের বোঝাপড়া খুবই ভালো ছিল। আমরা দল নির্বাচন করতাম, দলের সঙ্গে পরে যে আলোচনা হতো, তারা জানত একটা স্থায়ী কাঠামো আছে।

আর্থার আরও বলেন,আমি ও ইনজি তাদের ধারাবাহিকতা এনে দিচ্ছিলাম। আমি একজন খেলোয়াড়কে বলতে পারি যে- তুমি আগামী ১০টি ওয়ানডে খেলবে। আমরা জানি ও আমাদের ম্যাচ জেতাবে। মাঝেমধ্যে এটা অনেক ঝুঁকির। কিন্তু অন্তত খেলোয়াড়দের কাঠামোর প্রতি বিশ্বাস ছিল, নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বিশ্বাস করত এবং দলের জন্য খেলত। যদি এখানে ক্রমাগত পরিবর্তন এবং অস্থিরতা থাকে, খেলোয়াড়েরা নিজের সুরক্ষার কৌশলে চলে যায় এবং তারা নিজেদের জন্য খেলতে শুরু করে পরবর্তী সফরের কথা চিন্তা করে।

এখানেই পাকিস্তান নিজের পায়ে নিজেরাই গুলি করছে বলে মনে করেন আর্থার, এটা দেখা হতাশাজনক যে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হয় না, কোনো সঠিক উপায়ে যোগাযোগ নেই এবং তারা জানে যে বিষয়গুলো সব সময় পরিবর্তন হতে চলেছে। স্থানীয়ভাবে পাকিস্তানে অনেক প্রতিভা আছে। আমরা একটি উচ্চমানের কার্যকরী কাঠামো তৈরি করেছিলাম এবং আমরা সেটা বাস্তবায়নও করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান পরিবর্তনের সঙ্গে এটি হারিয়ে গেছে। খুবই হতাশাজনক। আমি এখনো মনে করি, পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়েই গুলি করছে, তবে এটা আরও ভালো হতে পারত।

মন্তব্য করুন: