বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বেতন এত কম

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বেতন এত কম

২০২৩ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ২১ ক্রিকেটার রেখেছে বিসিবি। নতুন চুক্তিতে সর্বোচ্চ বেতন ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা, সর্বনিম্ন ১ লাখ। অন্য দেশগুলোর খেলোয়াড়দের বেতন কত? বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্য কতটা?

বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। তাদের অ্যাকাউন্টে ৯০০ কোটি টাকা মজুদের কথাও শোনা যায়। ক্রিকেটারদের বেতন দেওয়াতেও কি ‘ধনী’ বিসিবি সবার ওপরে? সেজন্য সবার আগে নতুন চুক্তিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বেতন জানা প্রয়োজন। ২০২৩ সালের চুক্তিতে সর্বোচ্চ শ্রেণি ‘এ প্লাস’ গ্রেডিংয়ের টেস্ট ক্যাটাগরিতে মাসে বেতন সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ওয়ানডেতে ৪ লাখ, আর টি-টোয়েন্টিতে ২ লাখ। সর্বনিম্ন ‘সি’ গ্রেডে বেতন ১ লাখ টাকা।

তিন ফরম‌্যাটে ‘এ’ প্লাস গ্রেডে বেতন নির্ধারণে প্রথম ক‌্যাটাগরির শতভাগ, দ্বিতীয় ক‌্যাটাগরির ৫০ ভাগ এবং শেষ ক‌্যাটাগরির ৪০ শতাংশ বেতন পাবেন। দুই কিংবা এক ফরম‌্যাটে গ্রেডিং অনুযায়ী সর্বোচ্চ বেতনটাই পাবেন ক্রিকেটাররা।

এবারের চুক্তিতে সর্বোচ্চ বেতন সাকিবের।  ছবি: সংগৃহীতএবারের চুক্তিতে সর্বোচ্চ বেতন সাকিবের। মাসে তাঁর বেতন ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সঙ্গে দুই ফরম্যাটের অধিনায়ক হওয়ায় বাড়তি আরও যোগ হবে ৪০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে সাকিবের বেতন ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তাঁর পরেই তামিম। বাঁহাতি ওপেনারের মাসে আয় ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ক্যাটাগরিতে এবারই যুক্ত হওয়ায় জাকির হাসান ও হাসান মাহমুদ মাসে পাবেন ১ লাখ টাকা।

বেতনে সাকিব-তামিম ভারতীয় ক্রিকেটারদের ধারেকাছেও নেই। তিন ফরম্যাট খেলা বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার বেতন সর্বোচ্চ, মাসে পান ৭৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাকিবের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি বেতন তাঁদের।

বেন স্টোকস মাসে বেতন পান ১ কোটি ১ লাখ টাকা।  ছবি: সংগৃহীততবে ক্রিকেটারদের বেতনে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সবার ওপরে, এমনটা ভাববেন না আবার। তাদের চেয়েও বেশি বেতন দেয় ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। ইসিবির চুক্তিতে সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ক্রিকেটার বেন স্টোকস; মাসে বেতন ১ কোটি ১ লাখ টাকা। স্টোকসের জন্মস্থান নিউজিল্যান্ডও মোটা অঙ্কের বেতন দিয়ে থাকে ক্রিকেটারদের। সর্বোচ্চ ক্যাটাগরির কিউই ক্রিকেটারদের বেতন মাসে ৩০ লাখ টাকা। সর্বনিম্ন যাঁদের বেতন, তাঁরাও পান ২০ লাখ টাকার বেশি।

পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের বেতনও কম নয়। সর্বোচ্চ বেতন অধিনায়ক বাবর আজমের। পিসিবি থেকে তিনি প্রতি মাসে পান ১০ লাখ টাকা। তাদের সর্বনিম্ন বেতন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এশিয়ার আরেক দেশ শ্রীলঙ্কায় সর্বোচ্চ বেতন দিমুথ করুণারত্নে ও ভানিন্দু হাসারাঙ্গার। মাসে পান ৯ লাখ টাকা।

টাকার নেশায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা জাতীয় দল বাদ দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে মজে। তবে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটেও বেতনের অঙ্কটা কম নয়। সর্বোচ্চ শ্রেণির ক্রিকেটারের মাসে বেতন ১৩ লাখ টাকারও বেশি।

দক্ষিণ আফ্রিকায় টপ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারের বেতন মাসে ১৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন বেতন ৬ লাখ টাকা।

আয়ারল্যান্ডের শীর্ষ ক্যাটাগরিতে মাসে বেতন ৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে জিম্বাবুয়েতে সর্বোচ্চ ৫ লাখ, সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা। আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা মাস পান প্রায় ১ লাখ টাকার মতো।

প্যাট কামিন্স মাসে বেতন পান ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।  ছবি: সংগৃহীততাহলে বেতনের অঙ্কে প্রথম কে? দাঁড়ান, দাঁড়ান। অস্ট্রেলিয়ার কথা তো বলাই হয়নি। এই দেশটির ক্রিকেটারদের বেতন কপালে চোখ তুলবে আপনার! বেতনে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম প্যাট কামিন্স। তিনি মাসে পান ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

টেস খেলুড়ে ১২ দলের সর্বোচ্চ বেতন হিসাব করলে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে শুধু জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তান। বাকি ৯ দলই ওপরে। যেখানে সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া ক্রিকেটার কামিন্সের মাসে আয় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ বেতনধারী সাকিবের চেয়ে ২২ গুণ বেশি!

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Add